ভ্রমন পিপাসুদের জন্য নতুন স্বপ্নের রাজ্য হলো সাজেক ভ্যালী। এখানে একবার ঘুরে মনকে সন্তুষ্ট করতে পেরেছেন এমন মানুষের সংখ্যা কম। সাজেকের প্রতিটি পূর্ণিমাই হবে উপভোগ্য। আসলে, জায়গা টাই এমন। পাগল মন তাই বারবার ছুটে যেতে চাইবে সাজেকে।
সারা বছরই যাওয়া যায় সাজেকে। তবে বর্ষায় সাজেকের রূপ যেন বেড়ে যায় কয়েকগুন। বৃষ্টিতে কটেজ থেকে বের হওয়া না গেলেও বারান্দা থেকেই উপভোগ করা যায় মেঘ আর পাহাড়ের মেলবন্ধন। ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে টিনের চালের রিমঝিম নূপুরের শব্দ আর পাহাড়ে মেঘের বর্ষণ আপনাকে নিয়ে যাবে স্বপ্নের নতুন দিগন্তে।
খাগড়াছড়ি ভ্রমন
যোগাযোগ ব্যবস্থা
শুধুমাত্র সড়কপথে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে। কিন্তু আপনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ট্রেন বা প্লেনে করে যেতে পারেন। সেখান থেকে বাস বা অন্য কোনো পরিবহনে খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন।
সড়কপথ
সড়কপথে ঢাকা থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন কোম্পানীর একাধিক বাস দিনে ও রাতে ছেড়ে যায়।
ঢাকা – খাগড়াছড়ি
চট্টগ্রাম – খাগড়াছড়ি
ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত যেতে বাস যেতে জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ৫২০ টাকা।তবে এই রুটে কোনো এসি বাস নাই।
রেলপথে
ঢাকা থেকে সরাসরি খাগড়াছড়ির সাথে এখনো কোনো রেল যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি। রেলে করে রাঙ্গামাটি যেতে চাইলে আপনাকে প্রথমে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে হবে। চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন পরিবহনের অসংখ্য বাস রয়েছে সরাসরি খাগড়াছড়ি যাওয়ার।চ্ট্টগ্রাম স্টেশনের পাশেই আছে বিআরটিসি বাস কাউন্টারে।পায়ে হেটেই যেতে পারবেন।জনপ্রতি টিকিট খরচ পড়বে ২০০ টাকা ।
খাগড়াছড়ির দর্শনীয় স্থান
১। রিসাং ঝর্না
২। তারেং
৩।আলুটিলা গুহা
৪। বৌদ্ধ মন্দির
৫। ঝুলন্ত ব্রীজ
৬।শতবর্ষী বটগাছ৭।হাজড়াবাড়া ঝর্না
৮।রুইলুই পাড়া
বাস থেকে নামবেন খাগড়াছড়ির ইজোর রেস্টুরেন্টের সামনে। এখানে ফ্রেশ হয়ে পরোটা, ডিম ভাজি, সবজি দিয়ে নাস্তা সেরে চলে যাবেন শাপলা চত্বরে। গত ৫ নভেম্বর থেকে সবাইকে এখান থেকেই পিকাপ নিতে হচ্ছে। ভাড়াও বেড়েছে আগের চেয়ে। ঠিক করা চান্দের গাড়ি নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব চলে যান রিসাং ঝর্ননায়। গাড়ি আপনাকে যেখানে নামিয়ে দেবে সেখান থেকে ঝর্নায় নেমে যাবেন আপনশক্তিতে। নেমে ভালো সময় কাটিয়ে চলে আসবেন ৯ টার মধ্যে এবং চলে যাবেন বাঘাইহাটের দিকে। আর যদি সময় বেশি খেয়ে ফেলেন তবে টান দিয়ে চলে যাবেন স্কর্ট এর দিকে। ওখানে নাম লিখাবেন, তথ্য দিবেন। এরপর থেকেই সাজেকের পথে যেতে যেতে উপভোগ করবেন দুই পাশের পাহাড়ের সৌন্দর্য।
মনে রাখবেন
১।ড্রাইভারের সাথে সব ক্লিয়ার করে নিবেন, কোথায় কোথায় নিয়ে যাবে, তাদের খাবার, টাকা কখন দিতে হবে। চেষ্টা করবেন শেষে দেয়ার।
২। হৈচৈ, হট্টোগোল, স্থানীয়দের সাথে বাজে ব্যবহার করবেন না।
৩। বারৈয়ার হাট থেকে খাগড়াছড়ি, রাস্তা উপভোগ করার মত। দিন কি রাত।
৪। চান্দের গাড়ির ছাদে ভ্রমনে সতর্ক থাকুন। মজা যেন সাজা না হয়। তবে কিছুটা রাস্তা ছাদে ভ্রমন না করলে মিস থেকে যাবে।।
সাজেক ভ্রমন
সকাল সকাল আগেই ঠিক করে রাখা চাদের গাড়িতে করে রওনা দেবেন সাজকের উদ্দেশ্যে।পথে হাজাছড়া ঝর্ণাতে নেমে ওই স্পটটাও দেখে নিতে ভুলবেন না । সাজেক যেতে হয় আর্মি এসকর্টে এর সাথে সকাল ১০.৩০ অথবা বিকেল ৩ টায়। যাত্রাপথটা খুবই রোমাঞ্চকর পাহাড়ের গা বেয়ে আঁকাবাঁকা রাস্তা কখনো খাড়া হয়ে উঠে গেছে আবার কখনো ঢালু হয়ে নেমে গেছে। চারপাশে মেঘে ঘেরা মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য।
চান্দের গাড়ির ছাদে ভ্রমণের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন বিশেষ করে বাঁকগুলি ঘোরার সময়।আর কখনো কখনো আর্মিরা গাড়ি থামিয়ে ছাদ থেকে নামতে বলেছে । সাজেক পৌছাতে সময় লাগতে পারে ৩ ঘন্টা সময় । সাজেক নেমে হোটেল ভাড়া করবেন।সকালে ভোরে উঠে চলে যেতে পারেন সাজেকের সর্বোচ্চ চূড়া কংলাক পাড়ায়। ওখানে উঠতে একটু ১০-১৫ মিনিট ট্র্যাকিং করতে পারেন। ওখান থেকে সাজেক দেখা সকাল চমৎকার সুন্দর। বিশেষ করে যে কারনে সাজেক যাওয়া সেই মেঘ ই দেখা যায় এখান থেকে সবচেয়ে বেশি এরিয়া জুড়ে।
ওখানে চা খাইতে পারেন, পেয়ারা পাবেন, কলা পাবেন।ও হ্যা, চান্দের গাড়িতে আসার সময় বাঘাইছড়ি থেকে এক দুই কাদি কলা কিনে নিবেন। এত্ত মজার কলা কোথাও পাবেন না গ্যারান্টি।সকাল টা ওখানে কাটিয়ে নেমে আসবেন রুইলুই। যাওয়ার আগে অথবা আগের রাতে ওর্ডার করে যাবেন নাস্তা। এসেই খেয়ে নিবেন নাস্তা। নাস্তা খেয়ে আবার রুইলুই দেখবেন।
যদি ঝুলন্ত ব্রীজ,আলুটিলা গুহা দেখতে চান তবে সকালের স্কর্ট এ চলে আসবেন। আর যদি হাজাঝড়া দেখতে চান শুধু তাহলে বিকালের স্কর্টে রওনা দিয়ে দিবেন।বাঘাইছড়ি বা স্কর্ট যেখানে আছে তার থেকে সামান্য একটু হাটলেই পেয়ে যাবেন হাজাঝড়া ঝর্না। ঝর্না দেখে চলে আসবেন শহরে।এসে চাইলে ঝুলন্ত ব্রীজ দেখবেন যদি আগে চলে আসেন আর না হয় এসে বাসের টিকেট করে বাসে উঠার আগে খাবার খেয়ে রওনা দিবেন। ঢাকায় এসে পৌছাবেন সকাল ৫-৬ টায়। বন্ধের দিন, উৎসবের দিন সকল টিকেট বুকিং আগে ভাগে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। তা না হলে টিকিট নাও পেতে পারেন।
খেয়াল রাখবেন
১।চান্দের গাড়ির ছাদে ভ্রমনে সতর্ক থাকুন। মজা যেন সাজা না হয়। তবে কিছুটা রাস্তা ছাদে ভ্রমন না করলে মিস থেকে যাবে….. আমার মত যারা সব মজা নিতে চান।
২। রাতের সাজেক হেটে বেড়ানোর মজাই আলাদা। আর যদি গিটার নিয়ে হ্যালিপ্যাডে বসলে ত কথাই নাই।
৩।যে কোনো বিপদের সামনে পরলে আর্মি চেকপোস্টে যোগাযোগ করুন। আমার দেখা মতে বাংলাদেশের সবচেয়ে সিকিউরড জায়গা সাজেক।
সাজেক ভ্রমণ ২০২০,খাগড়াছড়ি ভ্রমণ,সাজেক ভ্রমণ প্যাকেজ,খাগড়াছড়ি ভ্রমণ স্থান,সাজেক ভ্রমন,খাগড়াছড়ি ভ্রমণ গাইড,সাজেক ভ্রমন খরচ,খাগড়াছড়ি ভ্রমণ খরচ,সাজেক ভ্রমন কাহিনী,খাগড়াছড়ি ভ্রমণ কাহিনী,সাজেক ভ্রমন গাইড,খাগড়াছড়ি ভ্রমন গাইড,খাগড়াছড়ি ভ্রমণ টিপস,খাগড়াছড়ি ভ্রমণ তথ্য,birbangla.com,