চলে আসছে শীতকাল ।শীত আসলেই মাথায় খুশকি, চুল ভাঙা, রুক্ষ ও চিটচিটে হয়ে যাওয়া। ঋতু পরিবর্তনের সময় ত্বকের সহনশীলতা বদলে যায় ফলে এই সব সমস্যাগুলো হয়ে থাকে।শুষ্ক ও ধুলোযুক্ত এ সময়ে চুলের জন্য চাই অধিক সময় আর অধিক যত্ন।এ সময়ের সব থেকে বড় সমস্যা হল খুশকি। যা অকালে চুল ঝরে পড়ার অন্যতম প্রধান কারন।
কটা সময় রূপচর্চা বলতেই নারীদের কথা চলে আসতো। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে। এখন ছেলে বা পুরুষরাও রূপচর্চার ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। তারাও এখন নিজেদের রূপচর্চার দিকে নজর দিয়েছেন।
স্বাভাবিকভাবেই পুরুষদেরকে ঘরের বাইরে বেশি সময় কাটাতে হয়। রোদে পুড়ে ও শীতকালে ধুলোবালির প্রলেপে ত্বকের সঙ্গে সঙ্গে রুক্ষ ও ম্লান হয়ে যায় তাদের চুল। তাই পুরুষদের চুলের রুক্ষতা দূর করতে নিয়মিত যত্নের প্রয়োজন।
শীতে ছেলেদের চুলের যত্ন
চুলের যত্ন:
প্রত্যেক পুরুষের কাছেই চুল শরীরের একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় অংশ। তাই নিয়মিত চুলের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। চুলের নিজস্ব কোনো রক্তনালী নেই। ত্বকের পুষ্টি থেকেই চুল পুষ্টি পায়। আর আমরা প্রতিদিন যে খাবার খাই তা থেকেই আমরা এ পুষ্টি পেয়ে থাকি। তাই সুন্দর চুলের অধিকারী হওয়ার জন্য পুরুষদেরও খানিকটা কষ্ট করতে হয়। চুলে নিয়মিত তেল দেয়া, চুল শ্যাম্পু করা, কন্ডিশনিং করা খুবই জরুরি কাজ। আর যদি সম্ভব হয় তবে সপ্তাহে অন্তত একদিন চুলে মেহেদি ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে।
চুলের যত্নে করনীয় ঃ
১. শীতকাল মানেই শুষ্ক সময়। চুল এ সময়ে হয়ে উঠে খুব রুক্ষ। অবশই নিয়ম করে সপ্তাহে ২-৩ দিন ভালো ভাবে গরম তেল মালিশ করতে হবে। তেলের সাথে লেবুর রস দিতে হবে যদি খুব খুশকি থাকে। নারকেল তেল অথবা জলপাইয়ের তেল ব্যাবহার করাটা বেশি শ্রেয় হবে। চাকরিজীবীরা অন্তত ছুটির দিনগুলোতে চুলের জন্য সময় দিবেন।
২. মাসে ১-২ বার টকদই, তেলের সাথে মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যাবহার করলে চুলের রুক্ষতা চলে যাবে।
৩. বড় চুলে নিতে হবে বাড়তি যত্ন। রঙ করা অথবা রিবন্ডিং চুলের জন্য মাসে ১-২ বার সেলুন অথবা পার্লারে গিয়ে ধরন বুঝে হেয়ার কেয়ার ট্রিটমেন্ট নিতে হবে। যতটা সম্ভব হেয়ার জেল/ স্প্রে/ আয়রন থেকে দূরে থাকতে হবে।
৪. চুলের শুষ্কতা দূর করতে অথবা চুলকে কোমল রাখতে এলোবেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। এই জেল শুধু মাত্র চুলের রুক্ষতাই কমাবেনা, চুল পড়া অনেকাংশে কমিয়ে দিবে।
৫. যতই শীত পড়ুক, অবশ্যই প্রতিদিন ভালো করে গোসল করে মাথার চুল ধুতে হবে। মোট কথা, চুলে কোনো ধুলো-ময়লা জমতে দেয়া যাবেনা। অবেই চুল থাকবে ঝলমল ও প্রাণবন্ত।
৬।চুলে ব্যবহারের পণ্য সতর্কতার সাথে নির্বাচন করুন। চুল ধুতে শ্যাম্পু ব্যবহার করুন এবং পরে ডীপার কণ্ডিশনার ব্যবহার করুন যাতে অতিরিক্ত ঠাণ্ডা বা শীতের কারণে চুল পরে না যায়।
৭।শীতের দিনগুলিতে সবচেয়ে বেশি উপকারে আসে হট অয়েলের ম্যাসাজ। নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল, বাদাম তেল বা যেকোনো চুলে লাগানোর তেল হালকা গরম করে নিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করে করে লাগান। ৩০ থেকে ৪০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন।
৮।শীতের সময়ে গোসলের পর চুল শুকোতে অনেক সময় লেগে যায়, আবার ভেজা চুল নিয়ে বাইরে যাওয়াও সম্ভব নয়। তাই গোসলের পর তোয়ালেতে সব টুকু পানি মুছে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে মাঝে মাঝে চুল শুকাতে পারেন। হেয়ার ড্রায়ার সবসময় কম তাপমাত্রায় ব্যবহার করুন।
৯।শীতের দিনে চুল রুক্ষ হয়ে ফেটে যাওয়া খুবই সাধারণ সমস্যা। তাই চুলে কোন রকমের ফেটে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিলেই দেরি না করে চুল ছেঁটে নিন।
১০।খুশকির জন্য কার্যকর টোটকা হলো- লেবু ও পেঁয়াজের রস এক করে চুলে মেশানো। চুলে খুশকি দূর করার জন্য মাথায় গরম তেল ম্যাসাজ করাটাও বেশ উপকারী।
সুদর্শন পুরুষ মানেই সুন্দর চুল এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী কোনো ব্যক্তিকে বোঝায়। তবে এজন্য নিয়ম মেনে নিয়মিত যত্ম, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, ঠিকমতো খাবার-দাবার গ্রহণ ও ভালো ঘুমের বিকল্প নেই।