মারায়ন তং” বলা যায় বাংলাদেশ এ ক্যাম্পিং এর জন্য অন্যতম জনপ্রিয় একটি যায়গা। অনেকদিন ধরে যায়গাটি আর্মি রা নিরাপত্তা জড়িত কারনে বন্ধ ছিলো। এখন আবার আগের মত ক্যাম্পিং করা যাচ্ছে। যদিও বর্ষায় এই পাহাড়ের আসল রুপ দেখতে পাওয়া যায়।
স্থানীয়দের কাছে এটি ‘মারায়ন তং’। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এ পাহাড়ের উচ্চতা প্রায় এক হাজার ৬৪০ ফুট। পাহাড়টা বান্দারবান জেলার আলীকদম উপজেলার মিরিঞ্জা রেঞ্জের মধ্যে পড়েছে।
মারায়ন তং জাদি পাহাড় ট্যুর প্ল্যান
ভালোবাসার, ভালোলাগার প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে সমৃদ্ধি জায়গার নাম হলো মারায়নতং জাদি।আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর জায়গা গুলোর মধ্যে অন্যতম।মূলত শীতকাল হলো মারায়নতং জাদিতে ক্যাম্পিং করার উপযুক্ত সময়।
মাত্র দেড় ঘন্টা ট্রেকিং,, দুপুরবেলার খাবার খেয়ে, খাবার হোটেল থেকে বের হয়ে অল্পকিছু দূর পাকা রাস্তা পেড়িয়ে, কাচা ইটের রাস্তা ধরে মারায়নতং এর ট্রেকিং শুরু হয়।মারায়নতং যাওয়ার মাঝপথে একটি অনেক সুন্দর, পরিস্কার আধিবাসী পাড়া দেখা মিলে।মং পাড়া নামে অতি পরিচিত।।
মং পাড়া থেকে ৫-৭ মিনিট উপরে উঠলে, একটি বটগাছের দেখা মিলে আর এই গাছ মারায়নতং ট্রেকিং করার সময় রেষ্ট নেওয়ার আদর্শ স্থান।মাঝে মাঝে কিছু মং আধিবাসীদের জুম চাষ করতে দেখা যায়। পাহাড়ে রয়েছে বিভিন্ন আদিবাসীর বসবাস। আর পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে রয়েছে মুরংদের পাড়া।
মারায়নতং উঠতে সন্ধ্যা হয়ে যায়।সন্ধ্যার শীতল বাতাস মুছে দিলো ক্লান্তি। এখানে পৌঁছেই সবার আগে তাঁবুগুলো খাটিয়ে ফেললাম।পাহাড়ের একেবারে চূড়ায় রয়েছে এক বৌদ্ধ উপাসনালয়। চারদিকে খোলা ও ওপরের দিকে চালা। এতে আছে বুদ্ধের এক বিশাল মূর্তি। দর্শনীয় স্থান হিসেবেও জায়গাটা চমৎকার। এখান থেকে যত দূর দৃষ্টি যায় শুধু পাহাড় আর পাহাড়। সেসবের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে জনবসতি। নিচে সাপের মতো এঁকে-বেঁকে বয়ে চলেছে মাতামুহুরী নদী।
কিভাবে যাবেন :
ঢাকা / চট্টগ্রাম হতে চকোরিয়া যেতে হবে। চকোরিয়া হতে চান্দেরগাড়ি/ বাস এ করে যেতে হবে আলিকদম আবাসিক মোড়ে। আবাসিক মোড় হতে যে কেও ক বলেই মারায়ন তং এর রাস্তা দেখিয়ে দিবে। ট্রাকিং এর অভ্যাস না থাকলে এই পাহাড়ে উঠতে নতুন দের ২ ঘন্টার মত লাগবে। এটি এমন একটি ট্রেকিং যেখানে কোন সোজা রাস্তা নেই শুধুই আপহিল।
মায়ারনতং ভ্রমণের টিপসঃ
১।মায়ারনতং পাহাড়ে ভ্রমনের সময় সাথে প্রচুর পরিমান পানি ,গ্লকোজ,স্যালাইন ,শুকনো খাবার এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সংগে নিবেন।
২।নিজেরা রান্না করতে চাইলে প্রয়োজনীয় উপকরন সঙ্গে নিবেন।তবে শুকনো কাঠের অভাব হবে না।
৩।রাতে ক্যাম্পিং করতে চাইলে তাবু,স্লিপিং ব্যাগ ও সাথে চাদর নেবেন সাথে।
৪।আশেপাশে অনুমতি ছাড়া ফল ফুল ছিড়বেন না।খুব বেশী দরকার হলে কিনে নেবেন।
৫।পাহাড়িদের সাথে ছবি তোলার ক্ষেত্রে অনুমতি নেবেন।
৬।পাহাড়ে রান্নাবান্না করলে অবশ্যই সাবধানে করবেন।না হলে আগুন ছড়ায় যেতে পারে।
৭।চিপস ,বিস্কুট, ড্রাই ফুড এর প্যাকেট সব সময় নিজের কাছে রাখবেন। যেখানে সেখানে ফেলবেন না।