প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদন অনলাইনে করার নিয়ম এবং কিভাবে আবেদন করবেন সকল তথ্য গুলি খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরব। ডিজিটাল তথ্য সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার তথ্য বাতায়ন নামে একটি তথ্যসেবা চালু করেছে। এই তথ্য বাতায়ন থেকে আপনি তথ্য পেতে পারেন খুব সহজেই। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কিছু বিশেষ সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ২০০১ সাল থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের বিশেষ কার্ড দেয়া হচ্ছে। এই কার্ডের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতা, বিভিন্ন প্রতিবন্ধী স্কুলে ভর্তি এছাড়াও বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে কাজে লাগে।
সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদন
প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে সর্ব প্রথম অনলাইনে আবেদন করতে হবে। অনলাইনে আবেদন করতে হলে কিছু নিয়ম মেনে সঠিক পদ্ধতিতে আবেদন করতে হবে। আমাদের পোস্টটি সাজানো হয়েছে প্রতিবন্ধি ভাতা আবেদন করার নিয়ম ও আবেদন pdf ফরম। আশাকরি অনুচ্ছেদটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
খুব সহজেই মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে অনলাইনে প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন করা যায়। আবেদন যাচাই বাছাইয়ের পর সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে ভাতা দেয়া হয়। তাই ঘরে বসেই এখন প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণ করা যাবে।
প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদনের যোগ্যতা সমূহঃ
- একটি নিদিষ্ট এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- আবেদনকারীকে অবশ্যই দুঃস্থ প্রতিবন্ধী হতে হবে।
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ অনুযায়ী সমাজসেবা কার্যালয় হতে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র অবশ্যই নিতে হবে।
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যে জেলার স্থায়ী বাসিন্দা সে জেলা হতে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র নিতে হবে
- মাথাপিছু বার্ষিক আয় ৩৬,০০০ (ছত্রিশ হাজার) টাকার উর্ধে নয় এমন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণ আবেদন করতে পারবেন।
- ৬ (ছয়) বছরের উর্ধে সকল ধরণের প্রতিবন্ধীকে ভাতা প্রদানের জন্য বিবেচনায় নিতে হবে।
- বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অবশ্যই নির্বাচিত হতে হবে।
প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদন অনলাইনে pdf ফরম
প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন করার নিয়ম সমূহঃ
- আবেদন mis.bhata.gov.bd/onlineApplication ফরমের লাল তারকা চিহ্নিত ঘরগুলো অবশ্যই পূরণ করুন। অন্যান্য ঘরগুলো পূরণ ঐচ্ছিক।
- আবেদনের সময় যদি পেমেন্ট/ অর্থ পরিশোধের বিষয় থাকে তাহলে মোবাইল ব্যাংকিং বা ই-চালানের মাধ্যমে পরিশোধ করুন।
- আবেদন ফরমে ছবি (প্রযোজ্য হলে) ও স্বাক্ষর আপলোড করুন এবং যে সব কাগজপত্র আবেদনের সাথে দাখিল করা প্রয়োজন (সাইজ নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে ) সেগুলো “সংযুক্ত” অপশনে ক্লিক করে আপলোড করুন।
- “অফিস বাছাই করুন” অপশন হতে আবেদনটি যে অফিসে পাঠাতে চান সেই অফিস নির্বাচন করুন।
- এরপর ‘প্রেরণ’ বাটনে ক্লিক করুন। “আপনার আবেদনটি সফলভাবে প্রেরণ করা হয়েছে” মর্মে একটি বার্তা আসবে।
- আবেদন পাঠানোর পর আপনি একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পাবেন। এটি সংরক্ষণ করুন। পরবর্তীতে “আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা” বাটনে ক্লিক করে এই নম্বরটি দিয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে পারবেন।
- আপনি আবেদন প্রেরণ না করা পর্যন্ত আপনার সিস্টেমে তা খসড়া হিসেবে সংরক্ষিত থাকবে। পরবর্তীতে তা আপনি প্রেরণ করতে পারবেন।
প্রতিবন্ধী ভাতা কারা কারা পাবেন?
আমাদের সমাজে যে সকল প্রতিবন্ধি আছে সকলেই এই ভাতার অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন তবে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ থাকা লাগবে। যদিও অনলাইন প্লাটফর্ম এই আবেদনটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। যাহারা ইউনিয়ন পর্যায়ে রয়েছে তাহারা এই আবেদন সম্পুর্ন করলে তাদের এই অবেদনটি স্থানীয় চেয়ারম্যান কতৃক সুপারিশ এর মাধ্যমে এটি গ্রহণ করা হবে। একইভাবে যাহারা সিটি অথবা পৌরসভা পর্যায়ে রয়েছেন তাদের আবেদনটি স্থানীয় মেয়র কতৃক সুপারিশ এর মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে। আপনি আবেদন করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনাকে একটি সুপারিশের প্রয়োজন হবে। চেয়ারম্যান ও মেয়র যে সকল প্রতিবন্ধী নির্বাচন করবে তারাই কেবল মাত্র এই ভাতা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
ভাতা পাওয়া জন্য কি কি কাগজ জমা দেওয়া লাগবে
প্রতিবন্ধী ভাতা ফরম পূরণ করে কতৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হত কিন্তু বর্তমান সময়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে এ ভাতার জন্য আবেদন করতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনার কিছু ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে। যেমন :জন্ম নিবন্ধন অনলাইন, জাতীয় পরিচয় পত্র ও সুবর্ন নাগরিক কার্ড।যদি এই তিনটি ডকুমেন্ট আপনার থাকে তাহলে আপনি এই ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারেন।
প্রতিবন্ধী ভাতা কত টাকা দেওয়া হবে ?
প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদন করলে আপনি যদি ভাতার জন্য নির্বাচিত হন তবে কেবল এই ভাতা পাবেন। পূর্বে এ ভাতা ছিল ৭০০ টাকা করে। কিন্তু এ বছর তা বাড়িয়ে ৮৫০ টাকা করা হয়েছে। যা প্রতি মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন। মোবাইল ব্যাংকিং মানে বিকাশ এবং নগদ একাউন্টে শুধুমাত্র এ ভাতা পাবেন।