নখ ত্বকেরই একটি শক্ত অংশ।আমাদের হাত ও পায়ের সৌন্দর্যের প্রধান অংশ হলো নখ।নখ শুধু হাত পায়ের সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে না। একইসঙ্গে এটি ব্যক্তিত্বও তুলে ধরে। ঝাঁ তকতকে, ঝকঝকে, আকর্ষনীয়, সুন্দর নখ কার না পছন্দ। নারীদের জন্য হাতের নখের সৌন্দর্য রক্ষা করা একটু কঠিন। নখ সুন্দর রাখতে পানির ব্যবহার যত কম করা যায় ততই ভাল। কিন্তু নারীদের প্রায় সব কাজেই পানির ছোঁয়া আছে। একটু ইচ্ছা এবং সচেতন থাকলেই সম্ভব নখের যত্ন নেওয়া।
নখের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ফাঙ্গাস।সময় মত নখের যত্ন না নিলে এই ফাঙ্গাস নখের অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলে।সবচেয়ে বেশি কষ্ট ভোগ করেন যারা ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত।আমরা নিজেদের অজান্তেই এ সকল সমস্যার সম্মুখীন হই।তাই নখের যত্ন নিয়মিত নেওয়া চাই।
একটু ইচ্ছা এবং সচেতন থাকলেই সম্ভব নখের যত্ন নেওয়া। সময় কিংবা অর্থের কারণে যারা পার্লারে গিয়ে নখের পরিচর্চা করতে পারেন না তারা ঘরে বসেই নিতে পারেন যত্ন। তাই আসুন জেনে নেই নখের যত্নের কিছু করণীয়।
নখের যত্নে করণীয়
১।নেইল কাটারের ব্যবহারঃ যখনি নখ কাটবেন তার আগে অবশ্যই নেইল কাটার ধুয়ে নিবেন ,দরকার হলে সাবান দিয়ে ধুবেন। সবার জন্য আলাদা নেইল কাটার রাখতে পারলে ভালো হয় ,কিন্তু এটা অনেকের জন্য সম্ভব না । তাই অন্তত পরিষ্কার রাখাটা অনেক জরুরি। এমন কেউ যদি কাটার দিয়ে নখ কেটে থাকে যার নখে ফাঙ্গাস আছে আর আপনি কাটার পরিস্কার না করেই আপনার নখ কাটলেন এতে আপনিও আক্রান্ত হবেন। তাই এ ব্যাপারে সাবধান। কাটার কেনার সময় খেয়াল করতে হবে যেন ধার (শার্পনেস ) ভালো থাকে নাহলে নখ জখম হবে।
২।নখ ভিজিয়ে নিনঃ নখ কাটার সবচাইতে ভালো সময় গোসলের পরে। এ সময় নখ নরম থাকে আর সহজে নখ কাটাও যায়। এছাড়া আপনি নখ কাটার আগে ৪/৫ মিনিট হালকা গরম পানিতে খাবার লবণ মিশিয়ে নিন আর তাতে হাত,পা,ভিজিয়ে রাখুন। এর পরে সাবান দিয়ে হাত পা ধুয়ে ,মুছে নখ কাটবেন।
৩।ময়েস্চরায়জার ব্যবহার করুনঃ আমাদের শরীরের মত আমাদের নখের জন্যেও দরকার ময়েস্চরায়জার। আমরা নেইল পলিশ রিমুভার দিয়ে তুলি এর ফলে নখের আদ্রতা হারিয়ে যায়। এ কারনে যখনি আপনি লোশন লাগাবেন নখ গুলোতেও মালিশ করবেন।
৪।নকল নখ লাগানো পরিহার করুনঃ আমরা আজকাল বিভিন্ন কায়দা করে নকল নখ লাগাই। এ প্রক্রিয়া ক্রমাগত করতে থাকলে আমাদের নখে ফাঙ্গাস আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মনে রাখবেন কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভালো না। যারা নেইল পালিশ বেশি ব্যবহার করেন তারা লক্ষ্য করবেন যে নখ হলুদ হয়ে গেছে। এর থেকে ফাঙ্গাস আক্রান্ত হবার সম্ভাবনাও বেড়ে যায় ।
৫।নখের যত্নে করণীয়ঃ যদি কোনো কারনে আপনার আঙ্গুলের নখ ফাঙ্গাস আক্রান্ত হয়ে থাকে তবে দেরী না করে তার উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন।প্রাথমিক ভাবে আপনি দুবেলা নখ ধুয়ে, মুছে সম পরিমানের পানি আর আপেল সিডার ভেনিগার মিশিয়ে লাগাতে পারেন অথবা হার্বাল লেমন গ্রাস তেল ২ ফোটা করে দিনে রাতে লাগাতে পারেন। তবে অনুরোধ করবো যে কোনো কিছু লাগানোর আগে একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন কারণ সবার ত্বক একই না। যা আমার জন্য প্রযোজ্য তা আপনার জন্য প্রযোজ্য নাও হতে পারে। কিন্তু মোট কথা বেশি ক্ষতি হবার আগে নিজের নখের যত্ন নিন। আজকে অবহেলা করলে কালকে ফলটা আপনাকে ভোগ করতে হবে।
৬।ম্যানিকিওর ঃ বাড়িতে যেসব উপকরণ আছে সেসব উপকরণ দিয়ে সেরে নিতে পারেন মিনিকিওর পেডিকিওর। প্রথমে আপনি হালকা কুসুম গরম পানিতে সামান্য লবণ, সামান্য শ্যাম্পু, ও লেবুর রস দিয়ে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন হাত ও পায়ের নখ। এরপর যেকোনো ব্রাশ দিয়ে নখ গুলো ঘুষে নিন। ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর নেইল কাটার দিয়ে আপনার পছন্দ মত সাইজ করে নখ কেটে নিন। তবে নখ সমান করে কাটুন কারন উচু নিচু করে কাটা নখ সহজেই ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। এরপর যেকোনো ময়শ্চারাইজিং লোশন দিয়ে ম্যাসাস করুন ৫ মিনিট । এতে আপনার রক্ত সঞ্চালন বাড়বে।
৭।নেইল পলিস ঃ এক সপ্তাহের বেশি নখে নেইল পলিস রাখবেন না।নেইল পলিস উঠাতে কোন ধারালো কিছু ব্যবহার করবেন না। সেক্ষেত্রে রিমুভার ব্যবহার করেন। অন্তত ৩-৪ দিন ব্যবধানে নখে নেইল পলিস ব্যবহার করুন।নেইল পলিস ব্যবহারে সচেতন হউন।অতিরিক্ত নেইল পলিস ও রিমুভার আপনার নখ গুলো কে ড্রাই করে এবং নখের প্রাকৃতিক কালার নষ্ট করে।
৮।খাবার ঃ নখ কে সুস্থ রাখতে ভেতরের পুষ্টি খুব দরকার । সেজন্য ভিটামিন বি, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়োডিন , আয়রন যুক্ত খাবার খেতে হবে।প্রচুর পরিমানে পানি খেতে হবে।ব
৯।ঘরোয়া পদ্ধতি ঃ অনেক সময় সবজি কাটতে হাতে কালো দাগ হয়। সেক্ষেত্রে কাটা লেবু ঘুসুন , এমনি পরিষ্কার হবে।
১০। বদঅভ্যাস ঃ দাঁত দিয়ে অনেকের নখ কাটার অভ্যাস থাকে। এটি অবশ্যই ত্যাগ করুন।