পাহাড় ও জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে খুব ভালোবাসেন? সময় পেলেই ছুটে যান পাহাড়ের কোলে? তাহলে আর দেরি না করে সময় পেলেই যেতে পারেন আলীর গুহা বা আলীর সুড়ঙ্গে।আলীর সুড়ঙ্গ নিয়ে রহস্যের শেষ নেই। আলীকদম নাম নিয়ে যেমন নানা কথা, উপকথা আর অভিমত চালু আছে, তেমনি রহস্যময় এই গুহা নিয়েও মজার মজার সব গল্প আর কিংবদন্তি পাওয়া যায়।খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রের অন্যতম আকর্ষণ প্রাকৃতিক এই গুহা। এটি দেখতে প্রতিনিয়ত হাজারো পর্যটক এর ভীর জমে।
আলীর সুড়ঙ্গ কিভাবে যাবেন?
তবে কখন কিভাবে দুর্গম পাহাড়ে এমন অদ্ভূত সুন্দর গুহা তৈরি হলো তা নিয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য বা নথি পাওয়া যায় না।বহুল প্রচলিত ধারণা হলো, আলোহক্যডং থেকে আলীকদম নামটির জন্ম। যার অর্থ পাহাড় আর নদীর মধ্যবর্তী স্থান। বান্দরবানের রাজা বোমাং সার্কেল চিফ এর নথিপত্রে ও পাকিস্তান আমলের মানচিত্রে আলোহক্যডং নামের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। পার্বত্য অঞ্চলের সবচেয়ে পুরনো মানচিত্রেও (Ensea Det Bengalla) পর্তুগীজ পণ্ডিত জোয়াও জে বারোজ (Jao De Barros) আলোহক্যডং নামটি ব্যবহার করেছেন।
আলী গুহা ভ্রমণ গাইড
ঢাকা থেকে কিভাবে যাবেন আলীকদম
ঢাকা থেকে সরাসরি আলীকদম যেতে পারবেন। ঢাকাতে শ্যামলি ও হানিফ বাস সরাসরি আলীকদম যায়। ঢাকা থেকে সরাসরি যাওয়াই ভালো। এতে সময় অনেক কমে যায়। এক্ষেত্রে ভাড়া হবে ৮৫০ টাকা। এছাড়া কক্সবাজারগামী যেকোন বাসে করে চকরিয়া গিয়ে যেতে পারেন আলীকদম। ঢাকা থেকে চকরিয়া বাস ভাড়া নিবে ৮৫০-১৪০০ টাকা। চকরিয়াতে আলীকদম যাওয়ার লোকাল বাস রয়েছে। এইসব বাস প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিট পর্যন্ত আলীকদমের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
তাছাড়াও লোকাল জীপ অথবা চাঁদের গাড়িতে করে চকরিয়া থেকে আলীকদম যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে লোকাল ভাড়া নিবে ৬০-৬৫ টাকা। পুরা রিজার্ভ নিলে ১২০০-১৫০০ টাকা নিবে ভাড়া।
প্রথমে আলীকদম থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে মংচপ্রু পাড়ায় যেতে হবে। হেঁটে কিংবা ইজিবাইকে করে যেতে পারেন। মংচপ্রু পাড়ার পাশ দিয়েই রয়েছে টোয়াইন খাল। এই খাল পার হয়ে কিছুক্ষণ পাহাড় ও ঝিরিপথে হেঁটে আলীর সুরঙ্গে যেতে হবে। সময় লাগবে ২০-৩০ মিনিট। সবগুলো গুহা দেখা ও আসা যাওয়ায় মোট সময় লাগবে ৩ ঘণ্টার মতো।
কোথায় থাকবেনঃ
আলী গুহায় একদিনে গিয়েই ঘুরে আসতে পারবেন। রাতে ঢাকা থেকে বাস করে গিয়ে সারাদিন ঘুরে আবার রাতের বাসে ঢাকা ফিরে আসতে পারেন। চট্টগ্রাম থেকে খুব সকালে গেলে ঘুরে আবার একদিনেই ফিরে আসতে পারবেন। তারপরও যদি থাকার প্রয়োজন হয় তাহলে আলীকদমে উপজেলা রোডে দ্যা দামতুয়া ইন অথবা জেলা পরিষদের ডাক বাংলোতে থাকতে পারেন। অথবা পান বাজারে একটি বোর্ডিং আছে যার মান তেমন ভালো না, চাইলে এই বোর্ডিং এ থাকতে পারেন।
কি খাবেনঃ
আলীকদমে বেশকিছু খাবারের হোটেল আছে এছাড়া পান বাজারেও বেশকিছু হোটেল রয়েছে। খুব ভালো মানের খাবার না থাকলেও মোটামুটি মানের খাবার পাবেন এসব হোটেলগুলোতে।
খরচঃ
দুই দিনের ভ্রমণে মাথাপিছু খরচ হবে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা, তবে একটু কষ্ট করে ভ্রমণ করলে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকার মধ্যেও সম্ভব।
সাবধনতাঃ এ ট্রেইল অনেক পুরাতন গাছের গুরি, গাছ পরে থাকতে দেখা যায়।। তাই ভালো গ্রিপের ট্রেকিং স্যান্ডেল পড়তে হবে।
***বাদুড়দের বিরক্ত করা যাবে না, মসালের আগুন, ধোয়া দিয়ে বিরক্ত করা যাবে না।
লক্ষ্যণীয় বিষয়ঃ ট্রেইলে চিপস্এর পেকেট, পলিথিন, প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্য, বোতল ইত্যাদি ফেলানো থেকে বিরত থাকুন।