বালি ভ্রমণ গাইড – বালি ভ্রমণ খরচ

বালি ইন্দোনেশিয়ার একটি দ্বীপ এলাকা ও প্রদেশ। বালি ও তার আশেপাশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপমালা নুসা পেনিদা, নুসা লেমবনগান ও নুসা সেনিনগান নিয়ে প্রদেশ গঠিত হয়েছে। এর রাজধানী দেনপাসার দ্বীপের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত। বালি পাহাড়, সাগর ও ঝর্ণার সমন্বয়ে অপরুপ সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি।বালির সৌন্দর্যের পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করতে পারবেন না যদি আপনি বালির নুসা পেনিডা ভ্রমণ না করেন। নুসা পেনিডা হল অসংখ্য সমুদ্র সৈকতের সমন্বয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা এক অপরুপ সৃষ্টি। আমার মতে এটা একটা Hidden Paradise।

নুসা পেনিডায় সমুদ্র সৈকত গুলোর মধ্যে অন্যতম হল kelingking Breach, Atuh Breach, Diamond Breach, Thousand Island Viewpoint, Angel’s Billabong, Crystal Bay, Broken Breach & Suwehan Beach। সব গুলো সমুদ্র সৈকত ঘুরে দেখতে হলে আপনাকে নূন্যতম এক বা দুই রাত নুসা পেনিডাতে থাকতে হবে।

বালি ভ্রমণ গাইড

ভিসাঃ
অনেকের মতে বালিতে আমাদের অন এরাইভাল ভিসা , যেটা একদম ভুল।বালিতে আমাদের ভিসা এক্সপেম্পশন। মানে ভিসা ফ্রি । অন এরাইভালে কিছু টাকা দিয়ে ভিসা নিতে হয় । কিন্তু এক্সেম্পশনে একদম ফ্রি।ইমিগ্রেশনে পাসপোর্ট তা দিলেই আপনাকে সীল দিয়ে ছেড়ে দিবে। মাঝে মাঝে আসার কারণ জানতে চাইতে পারে। এছাড়া সন্দেহ হলে হোটেল বুকিং দেখতে চায় ।

মানি এক্সচেঞ্জঃ
বালিতে সব জায়গায়ই মানি এক্সচেঞ্জ পাবেন। কিন্তু যেসব দোকানে দেখবেন রেট অস্বাভাবিক বেশি ভাববেন সেখানে সমস্যা আছে। তাই বড় দোকান দেখে এবং অথরাইসড দেখেই টাকা ভাঙাবেন।
হোটেলঃ
একটা সহজ উদাহরণ দিয়ে শুরু করতে চাই। “ বাংলাদেশে যে হোটেল ৬ হাজার টাকায় পাবেন বালিতে সে হোটেল ২ হাজার টাকা। “ বালি তে হোটেলের অভাব নেই। ৭০০ থেকে শুরু করে লাখ টাকার ও হোটেল আছে। মোটামুটি ভাল একটা ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে পাবেন। সকালের ব্রেকফাস্ট সহ।
যাতায়াতঃ
বালিতে যাতায়াত এর অনেক মাধ্যম আছে। বেস্ট অপশন একটা স্কুটার ভাড়া নেয়া। প্রতিদিন ৬০-৮০ হাজার রুপিয়া। মানে ৩৫০ থেকে ৪৮০ টাকা। কিন্তু একটু দামাদামি করে ৫০ হাজার রুপিয়া তে ভাড়া নেয়া কোন বেপারই না। ৫০ হাজার মানে ৩০০ টাকা। স্কুটার আপনার হোটেল এর রিসিপশনেই পাবেন। না থাকলে রিসিপশন থেকেই বলে দিবে যে কাছে কোথায় স্কুটার ভাড়া দেয়।
এছাড়া একটা অ্যাপ আছে না গো জেক । এটা অনেকটা পাঠাও এর মতো । এটা ব্যবহার করে আপনি ঘুরতে পারবেন। আর গ্র্যাব তো আছেই।
খাবারঃ
খাবার আসলে নিজের কাছে। কিন্তু তাও একটা ধারনা দিচ্ছি , প্রতি বেলা মোটামুটি খেতে হলে এক জনের ৫০ হাজার রুপিয়া গুনতে হবে। মানে ৩০০ টাকা। আপনি যদি একটু ভ্রমণ রসিক হন তবে খরচটা বাড়তে পারে।

বালি দর্শনীয় স্থান


বালিতে বেশিরভাগ প্রাকৃতিক জায়গায়ই একদম নাম মাত্র এন্ট্রি ফি থাকে। ৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকার মধ্যে । কিছু জায়গা এমন ও আছে যেখানে কোন টাকা লাগে না।
বালিতে বিভিন্ন জায়গা আছে । এগুলোর মধ্যে এক এক জনের পছন্দ এক এক রকমের।
১।কুটাঃ
কুটা এয়ারপোর্ট থেকে কাছের এলাকা। এটা সবচেয়ে টুরিস্ট এ পরিপূর্ণ এলাকা। এখানে প্রচুর হোটেল, রেস্টুরেন্ট , মাসাজ পার্লার , ট্যাটু শপ , বার, ইত্যাদি আছে। এই এলাকাটা সবসময় জমজমাট থাকে।
২।উবুদঃ
উবুদ অনেকটা গ্রামের মতো। এখানে প্রচুর ইউরোপিয়ান আসে। এরা এখানে এসে মাসের পর মাস থেকে যায়। এখানে এসে ইয়গা করে , কুকিং ক্লাস করে, মাউন্ট বাতুর এবং আগুং এ হাইকে যায় । এখান থেকে রিভার রাফটিং, রাইস ট্যারেস, ওয়াটার ফল কাছাকাছি।
৩।উলুয়াতুঃ
যারা একটু নিরজন সময় কাটাতে চান তারা উলুয়াতু থাকতে পারেন। খুব ঠাণ্ডা একটা এলাকা। পাহাড় আর সমুদ্রে ঘেরা একটা এলাকা। সারফাররা বেশিরভাগ সময় এখানে আসে। এখানের বীচ গুলোতে স্রোত অনেক। তাই এটাকে সার্ফিং প্যারাডাইস ও বলা হয়।
৪।সেমিনিয়াকঃ
বালির গুলশান বলা চলে এটাকে। এখানে অনেক ভিলা আছে। সব কিছুর দামই একটু বেশি এখানে। অনেক ভাল ভাল রেস্টুরেন্ট, শপ, ক্লাব এখানে আছে।
৫।চ্যাঙ্গুঃ
এটা একটা পার্টি এলাকা। বারো মাসই এখানে পার্টি চলে। যারা পার্টি পছন্দ করেন , ঘুরে আস্তে পারেন চ্যাঙ্গু থেকে।
এছাড়া বালিতে আরও অনেক জায়গা আছে যেমন নুসা পেনিদা, নুসা দুয়া, পাদাং বে এসব জায়গায় ও অনেকে থাকতে ভালবাসে। তাই যাওয়ার আগে একটু ইন্টারনেট থেকে রিসার্চ করে যাবেন । যে কোনটা আপনার টেস্ট ম্যাচ করে।
যেখানেই ঘুরতে যাবেন আপনার আচারন আপনার দেশের পরিচয় বহন করবে,
খেয়াল রাখবেন আপনার দ্বারা যেনো পরিবেশের কোন ক্ষতি না হয়।

Leave a Comment