বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায়। বিদ্যুৎ বিলের চিন্তা ? আর না ! আর না !

আমাদের দৈনন্দিন জিবনে বিদ্যুৎ একটি অপরিহার্য অংশ যা ছাড়া আমাদের জীবন এখন এক কথায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে । কিন্তু সেই বিদ্যুৎ ব্যাবহারের  পর তার বিল যখন মানুষের গলার কাটা হতে পরনত হয় । তখন মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকে না । বলতে গেলে মাসিক খরচের বড় একটা অংশ এই বিদ্যুৎ বিল এ পরিশোধে চলে যায় । তখন অনেকের মনে চিন্তা আশে যদি বিদ্যুৎ বিলা টা কমাতে পারতাম । হ্যা তাদের এই চিন্তা কে লাঘব করতে আজকে বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায় নিয়ে কিছু ছোট খাট টিপস নিয়ে এসেছি । আশা করি এতে প্রায় সবাই কম বেশি উপকৃত হবেন ।

বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায়

বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায়

 

১। বৈদ্যুতিক গ্যাজেট ব্যাবহারের পর বন্ধ করে রাখুন

আমাদের দৈনন্দিন জিবনে ফ্যান , বাতি (লাইট) , টিভি , কম্পিউটার ইত্যাদি আমরা কম বেশি সবাই ব্যাবহার করে থাকি । কিন্তু প্রয়োজন শেষে আমরা অনেকেই সেগুলো চালিয়ে বা স্ট্যান্ডবাই মুডে রেখে দেই যা বিদ্যুৎ অপচয় এর সামিল । এতে যেমন বিদ্যুৎ অপচয় হয় তেমনি অহেতুক ব্যাবহারে অত্যাধিক বিল ও আসে । তাই আমরা এই সকল গ্যাজেট ব্যাবহারের পরে যদি সুইচ অফ বা সম্পুর্ন রুপে বন্ধ করে রাখি তাহলে কিন্তু অনেক অংশে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় হয় । অনেক সময় আমরা অহেতুক বাথ্রুম কিংবা বারান্দার  লাইট জালিয়ে রাখি কিংবা মেশিন বা ইস্ত্রি ব্যাবহার পরে প্লাগ দিয়ে রাখি । এই সকল ক্ষেত্রে আমরা ব্যাবহারের পর সকল বৈদ্যুতিক গ্যাজেট যদি ব্যাবহারের পরে প্লাগ খুলে রাখি কিংবা সুইচ বন্ধ রাখি তাহলে বিদ্যুৎ বিল অনেক খানি কমে আসবে ।

 

২। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যাবহার করুন

আপনার বাড়িতে এখনো পুরনো ধাঁচের লাইট বাল্ব থাকলে তা বদলে এনার্জি-সেভার বাল্ব ব্যবহার শুরু করুন।  এনার্জি বাল্ব বা এলইডি বাতি ব্যবহার করা হলে বিদ্যুতের ব্যবহার কমে আসে। প্রচলিত একটি বাতি একশো ওয়াট ব্যবহার করে, সেখানে একটি এনার্জি বাতি ব্যবহার করে মাত্র ২৫ ওয়াট।  এগুলো ৭৫% পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারে আর এদের আয়ুও হয় ছয়গুণ বেশি।

শুধু বাল্ব নয় বরং আরও কিছু ইলেক্ট্রনিকস ব্যবহার করা যেতে পারে  যেমনঃ ইনভার্টারযুক্ত ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন  যেগুলো কম বিদ্যুতেই চলে। এগুলো ব্যবহার করতে পারেন কেননা এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ বিল দুই তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনা সম্ভব।

 

৩। এসি বা এয়ার কন্ডিশন এর  নিয়ন্ত্রিত ব্যাবহার

বাসাবাড়িতে এসি ব্যবহার এখন অনেক বেশি নিয়মিত ঘটনা। নিয়ন্ত্রিতভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রন ব্যবহার করা গেলে খরচ কমে যাবে। এসির তাপমাত্রা সবসময় ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে হবে। নির্দিষ্ট মাত্রায় ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ার পর এসি বন্ধ করে ফ্যান চালানো যেতে পারে। এছাড়াও রাতে টাইমার দিয়ে রাখা ভালো, যাতে নির্দিষ্ট মাত্রায় ঠাণ্ডা হওয়ার পর আপনা আপনি বন্ধ হয়ে যায়। এসি ও ফ্রিজের ফিল্টার নিয়মিত সময় পরপর পরিষ্কার করানো হলে সেটি কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে।

 

৪। গুণগত মান সম্পন্ন তার এর ব্যাবহার

অনেকেই তার কে কোন পাত্তাই দেন না । কিন্তু ভালো তার যদি ব্যাবহার না করেন সে ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিল ও যেমন বাড়ে ঠিক তদ্রুপ শর্ট সার্কিটের ফলে মৃত্যু ঝুকি ও বাড়ে ।বিদ্যুতের সংযোগ ও তারের ওপর বিদ্যুতের বিল অনেক সময় নির্ভর করে। খারাপ মানের তার হলে, সংযোগ দুর্বল বা নড়বড়ে হলে সেটি লো ভোল্টেজের সৃষ্টি করে, ফলে বিলও বেড়ে যায়।বহুতল ভবনের সাব-স্টেশন পুরাতন হলে সেটি বেশি বিলের কারণ হতে পারে। বছরে অন্তত একবার এসব যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করতে হবে।

 

৫। নস্ট বা খারাপ সংযোগ সারিয়ে তুলুন

বাড়িতে অনেক সময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ ত্রুটিপুর্ন বা নস্ট হবার কারণে আপনার বিদ্যুৎ খরচ বেশি হতে পারে। এক্ষেত্রে পেশাদার কোনো ইলেক্ট্রিশিয়ান কিংবা ইঞ্জিনিয়ার ডাকিয়ে বাড়ির সংযোগ চেক করিয়ে নিতে পারেন। এছাড়াও আপনি কি করলে বিদ্যুৎ খরচ কমাতে পারবেন সে বিষয়ে তিনি পরামর্শ দেবেন।

৬। ওয়াশিং মেশিন ব্যাবহারে নিজের বুদ্ধি ব্যাবহার করে সচেতন হউন

ওয়াশিং মেশিন ব্যবহারে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ খরচ হয়ে থাকে। খরচ কমাতে চাইলে কখনোই গরম পানির সেটিং ব্যবহার করবেন না। পানি গরম করতে বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়। আর ড্রায়ারে কাপড় শুকানোর বদলে বারান্দা বা ছাদে দড়ি টাঙ্গিয়ে তাতে নেড়ে দেবার ব্যবস্থা করুন। নেহায়েত বর্ষাকাল না হলে ড্রায়ার ব্যবহারের তেমন কোনো যুক্তি নেই।

৭। বিকল্প যন্ত্রপাতি ব্যাবহার করুন 

বাসায় রান্না করা বা খাবার গরম করার ক্ষেত্রে মাইক্রো ওভেন ব্যবহার না করে চুলা কিংবা  স্লো কুকার বা টোস্টার ব্যবহার করা যেতে পারে । মাইক্রো ওভেনে ডিফ্রস্ট না করে পানিতে রেখে খাবারের বরফ ছাড়িয়ে নেয়া যেতে পারে। এছাড়া ওয়াশিং মেশিনে গরম পানির সেটিং ব্যবহার না করলে বিদ্যুৎ বিল নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

৮। সৌরশক্তি র ব্যাবহার  

এখন বহুতল ভবনে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার প্রায় অনেক টা বাধ্যতামূলক করেছে বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থাগুলো যেমনঃ বিদ্যুৎ বিভ্রাট কালিন সময়ে যেন লিফট আটকে না যায় সে কারনে অনেক ভবন গুলোতে শিড়ি কিংবা লিফটে বিদ্যুৎ সচল রাখার জন্য সৌর শক্তির সঞ্চিত বিদ্যুৎ ব্যাবহার করছে । যদি আপনার ভবনে বা এলাকার কোথাও  বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে বা বেশি লোডশেডিং হয়, তাহলে  তারাও সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারেন।

৯।পরিষ্কার রাখুন আপনার ইলেক্ট্রনিকস গ্যজেট সমূহ

রেফ্রিজারেটরের কয়েল পরিষ্কার রাখলে তা চলতে বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে না। বছরে দুবার করে একে পরিষ্কার করিয়ে নিলে আপনার বিল কম আসবে। একইভাবে আপনার এসির ফিল্টারও পরিষ্কার রাখুন। শুধু এসি কিংবা রেফ্রিজারেটর নয় ফ্যান , ওভেন কিংবা ওয়াশিং মেশিন ও পরিস্কার করে রাখুন  কেননা এগুলো ময়লা থাকলে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বেশি বিদ্যুৎ খরচ হতে পারে।

 

এছাড়া দিনের বেলায় ঘরের ভেতর বাতি না জ্বালিয়ে সূর্যের আলোর সুবিধা নেয়ার প্রবণতা তৈরি করা ভালো। এটি বাসাবাড়ির বিদ্যুতের ব্যবহার অনেকটা কমিয়ে দিতে পারে। এতে কমবে আপনার বিদ্যুৎ বিলও।

এই ছিল আজকের মত । আশাকরি এই ছোট খাট টিপস গুলো আপনাদের অনেক উপকারে আসবে । ভবিষ্যতে আরো অনেক টিপস নিয়ে হাজির হবো । আজকের মত বিদায় ।

 

দৈনন্দিন চাকরীর যাবতীয় খবররা খবর পেতে চোখ রাখুন TodayBDjobs এর ইংরেজী ভার্শনে ।


ফ্রিজের বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায়, বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায়, বিদ্যুৎ বিল কমানোর টিপস, এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর উপায়, বিদ্যুৎ বিল কিভাবে কমানো যায়, ডিজিটাল মিটারে বিল কমানোর উপায়, বিদ্যুৎ বিল বেশি আসলে, বিদ্যুৎ বিল বেশি আসার কারন,বিদ্যুৎ বিল বেশি আসলে করণীয়,বিদ্যুৎ বিল বেশি আসার কার,বিদ্যুৎ বিল বেশি আসলে করনীয়,বিদ্যুৎ বিল কিভাবে কমানো যায,ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল,বিদ্যুৎ বিল সমস্যা,কারেন্ট বিল বেশি আসার কারণ,কারেন্ট বিল কমানোর উপায়, ডিজিটাল মিটারে বিল কমানোর  টিপস,

Leave a Comment